আপনি ব্লগিং কিভাবে শুরু করবেন ?
আমি গত তিন বছর যাবৎ ব্লগিং করছি। তাই অভিজ্ঞতা থেকে বলছি কিছু।
যাই হোক, শুরু করাটা অনেক সহজ কিন্তু বুদ্ধি খাটিয়ে ব্লগিং শুরু করাটাই শ্রেয়। চলুন জানা যাক ব্লগিং শুরু করার সম্পর্কে_
ব্লগিং শুরু করার কিছু সাধারণ কারণ:
- আপনি ব্লগিং করার মাধ্যমে আয় করতে পারবেন। বর্তমানে অনেকেই ব্লগিংকে তাদের পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে এবং সফলতাও পাচ্ছে।
- অডিয়েন্ট বা ভিজিটরদের অনুপ্রাণিত করতে। আপনার প্রকাশিত আর্টিকেল পড়ে অনেকেই উপকৃত হবে।
- জনপ্রিয়তা পেতে বা নিজেকে ব্রান্ড হিসেবে উপস্থাপন করতে ব্লগিং একটি অনত্যম মাধ্যম। যেখানে আপনি আপনার দক্ষতার পরিচয়ে শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় হতে পারবেন।
- ব্লগাররা কন্টেন্ট লিখার জন্য অনেক রিসার্স করে থাকে যার ফলে তার চিন্তাধারার উন্নত হয় এবং অনেক ধারণা পাবেন যা আপনার জীবনকে বদলে দেবে।
- ব্লগাররা একটি সম্প্রদায় এবং অন্যদের ব্লগারের ধারণা, গল্প এবং অভিজ্ঞতার সাথে যোগাযোগ করার জন্য একটি জায়গা তৈরি করতে পারে।
- ব্লগিং শুরু করা একজন ব্লগারকে প্রযুক্তিগত দক্ষতার বিকাশ করে।
ব্লগিং শুরু করার ধাপ সমূহ?
- একটি ব্লগিং প্ল্যাটফর্ম/ বিষয়বস্তু বেছে নিন
- একটি ডোমেন নাম এবং ওয়েব হোস্টিং নির্ধারণ করুন
- ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করুন
- ওয়ার্ডপ্রেস থিম পছন্দ করুন এবং ব্লগ ডিজাইন করুন
- প্রয়োজনীয় ব্লগিং প্লাগইন ইনস্টল করুন
- আপনার ব্লগ চালু করুন
- আপনার ব্লগ প্রচার করুন
- ব্লগটিকে গুগল এডসেন্স এর জন্য মনিটাইজ করুন
একটি ব্লগিং টপিক/ বিষয়বস্তু বেছে নিনঃ
ব্লগিং শুরু করার জন্য সর্বপ্রথম সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি হলো আপনি কোন বিষয়টি নিয়ে লিখতে চাচ্ছেন বা কোন টপিক নিয়ে ব্লগ শুরু করতে চাচ্ছেন। ব্লগিং এর টপিক বা বিষয়বস্তু বেছে নেওয়া সহজ উপায় হলো আপনার যে বিষটি সম্পর্কে ভালো ধারণা বা দক্ষতা আছে সেটি দিয়ে শুরু করা। আপনি যদি কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হন তবে এটি আরও ভাল। মানসম্পন্ন কন্টেন্ট লেখার মাধ্যমে আপনার ব্লগকে বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে এবং ভিজিটর বাড়াতে পারবেন।
সর্বাধিক সফল ব্লগগুলি একটি বিষয়ে নিয়ে গড়ে ওঠে, যেমন: মানি মেকিং অনলাইন, রেসিপি, ভ্রমণ গাইড, ফিটনেস, ফ্যাশন ইত্যাদি। তবে আপনি চাইলে একাধিক টপিক নিয়েও কাজ করতে পারেন, এটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করে।
ব্লগিং শুরু করার জন্য জনপ্রিয় কয়েকটি টপিক:
- Health & Fitness
- Travel Guide
- Education
- Fashion and Lifestyle
- Reviews Blog
- inspirational blog
একটি ডোমেন নাম এবং ওয়েব হোস্টিং নির্ধারণ করুনঃ
আপনার ব্লগের ডোমেন নামটি নির্ধারণ করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কেননা এই নামেই আপনার ব্লগটি মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পাবে। যেমন আমার ব্লগের ডোমেন নেম contextandlinks.blogspot.com ডোমেন বেছে নেওয়ার সময় ডটকম নেওয়া চেষ্টা করবেন।
ব্লগিং টপিকের সাথে মিল রেখে ডোমেন নেওয়াই সবচেয়ে ভালো কারন ভিজিটররা আরো সিকিউরিটি অনুভব করবে। যদি ডোমেন নেম নেওয়ার আইডিয়ার প্রয়োজন হয় তাহলে গুগলে সার্চ করুন: Domain Name Generator তাহলে আপনি অনেকগুলো প্লাটফর্ম পাবেন যেখানে শুধু একটি ওয়ার্ড লিখলেই অনেকগুলো আইডিয়া পাবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করুনঃ
ডোমেন এবং হোস্টিং ক্রয় করার পর আপনাকে লগিং ডিটেইলস দেওয়া হবে। সেখান থেকে আপনি সহজেই ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করতে পারবেন। বিশ্বের প্রায় ৩০% ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ব্লগ চালাচ্ছেন। ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ব্লগ পরিচালনা করা এবং এর ব্যবহার খুবই সহজ হওয়ায় এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে।
পূর্বে ওয়েবসাইট তৈরি করতে কোডিং জানার প্রয়োজন হতো কিন্তু বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস এর মাধ্যমে কোন প্রকার কোড জানা ছাড়াই আপনি আপনার সম্পূর্ণ ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করার অনেক ভিডিও ইউটিউব এ পাবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস থিম পছন্দ করুন এবং ব্লগ ডিজাইন করুনঃ
আপনার ওয়েবসাইটি কেমন দেখাবে তা সম্পূর্ণ নির্ভর করে আপনার থিম নির্বচন এর উপর। ওয়ার্ডপ্রেসে অনেক থিম কালেকশন রয়েছে আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো একটি বেছে নিতে পারেন। ওয়ার্ডপ্রেস এর অনেক ফ্রি থিম রয়েছে যেগুলো সত্যিই অনেকটা প্রিমিয়াম থিম এর মতো কাজ করে থাকে। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে Newspaper X theme ব্যবহার করছি।
কিছু এডসেন্স ওপটিমাইজড ফ্রি থিমের নাম:
- ColorMag
- EditorialMag
- VMag
- Maggie Lite
- Newspaper Magazine
- CoverNews
এগুলো ছাড়াও অনেক ওয়ার্ডপ্রেস থিম রয়েছে, আপনার পছন্দমতো বেছে নিয়ে ডিজাইন করতে পারেন।
প্রয়োজনীয় ব্লগিং প্লাগইন ইনস্টল করুনঃ
যেহেতু আপনি ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ব্লগ শুরু করবেন তাহলে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্লাগইন ইনস্টল করতে হবে। প্লাগইন হলো একটি সফ্টওয়্যার যা আপনার ওয়েবসাইটের বাড়তি ফাংশন বা ফিচার যুক্ত করে যার ফলে আপনার কাজ আরো সহজ হয়ে যায়। মনে রাখবেন বেশি প্লাগইন ইনস্টল করলে আপনার সাইট এর স্পিড পারফরম্যান্স কমে যাবে।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগইন:
এগুলো প্রায় প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটেই থাকে তাছাড়াও অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্লাগইন রয়েছে যেগুলো প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনার ব্লগ চালু করুনঃ
আপনার ব্লগের থিম ডিজাইন এবং সকল সেটিং পর্ব শেষ করার পরই, ব্লগটিতে আর্টিকেল লিখা শুরু করুন। প্রতিদিন অন্তত দুটি করে আর্টিকেল পোস্ট করুন। আর্টিকেল লিখার সময় অবশ্যই এসইও এর উপর নজর দিবেন যার ফলে গুগলে র্যাঙ্কিং এর প্রথম পেইজে থাকবেন। একটি ভালো মানের আর্টিকেল এ কমপক্ষে 500/600 শব্দ থাকা প্রয়োজন তবে তা নির্ভর করে আপনার উপর। গুগলের মতে একটি পেইজে ২৫০ থেকে ৩০০ শব্দ থাকা উচিত।
আর্টিকেল পোস্ট করার সাথে সাথে ব্যাকলিংক তৈরি করুন যা আপনার ওয়েবসাইটের পেজ অথরিটি ও ডোমেন অথরিটি বৃদ্ধি করবে। আপনি যত ভালো কন্টেন্ট লিখবেন তত ভিজিটর ফিডব্যাক পাবেন।
বি. দ্র. পুরো লিখাটি লিখেছেন প্রত্যয় দাস
Post a Comment